শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায় | রক্ত কমে গেলে কি খাওয়া উচিত

শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায় – আমরা জানি যে শরীরের প্রয়োজনীয় জিনিস পরিবহন করার জন্য এবং অপ্রয়োজনীয় জিনিস ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য শরীরে রক্তের প্রয়োজন হয়। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের মধ্যে পাঁচ থেকে ছয় লিটার রক্ত থাকে। রক্তই শরীরের প্রতিটি অংশে অক্সিজেন বহন করে।

এইজন্য যদি কোন কারনে শরীরের রক্ত কমে যায় তাহলে মানুষের শরীরের বিভিন্ন ধরনের রোগ দেখা দেয় এবং অতিরিক্ত রক্ত কমের কারণে মানুষের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।

যদি আপনার শরীরেও রক্তের ঘাটতি থাকে তাহলে আপনি এমন কিছু খাবার খেতে পারেন, যেগুলি আপনার শরীরে খুব দ্রুত রক্ত তৈরি করবে।

আজকের এই আর্টিকেল থেকে আপনি শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায়, কোন সবজি খেলে রক্ত হয়, রক্ত কমে গেলে কি খাওয়া উচিত, রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ইনজেকশন – এই সকল বিষয়ে জানতে পারবেন। যদি আপনি মনে করেন আপনার শরীরের রক্তের ঘাটতি রয়েছে তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই সহাহোক।

শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায়

শরীরের রক্ত বৃদ্ধির জন্য যে খাবার গুলি আছে সেগুলি যদি আপনি খেয়ে থাকেন তাহলে আপনার শরীরের খুব দ্রুত রক্তের বৃদ্ধি হতে থাকবে। তাই চলুন দেরি না করে সর্বপ্রথম সেই সকল খাবারগুলির নাম জেনে নেওয়া যাক।

১. আয়রন জাতীয় খাবার

শরীরে যখন আয়রনের ঘাটতি থাকে তখন হিমোগ্লোবিনের অভাব দেখা দেয়। এইজন্য আপনাকে আয়রন জাতীয় খাবার খেতে হবে। আয়রন জাতীয় খাবারগুলি হল ডিম, বাদাম, মটরশুঁটি, মসুর ডাল এবং কিসমিস

২. ভিটামিন বি ১২ বাড়ানোর খাবার

শরীরে ভিটামিন বি ১২ এরকম হলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে এবং শরীরের ক্লান্তি আসে। এবং ভিটামিন বি ১২ কম হয়ে গেলে শরীরের হিমোগ্লোবিন এর পরিমাণ কমে যায়। ভিটামিন বি ১২ বাড়ানোর জন্য আপনাকে মটন, ডিম, দুগ্ধজাত খাবার, গোটা শস্য, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি খেতে হবে।

৩. ফলিক অ্যাসিড জাতীয় খাবার

শরীরে ভিটামিন বি ৯ এর ঘাটতি দেখা দিলে হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি দেখা যায় বা হিমোগ্লোবিন কমতে শুরু করে। ফলিক এসিড বাড়ানোর জন্য পালং শাক, গোটা শস্য, স্প্রাউট, অ্যাসপারাগাস ইত্যাদি খাবার খান।

৪. ভিটামিন এ জাতীয় খাবার

ভিটামিন এ এর অভাব থাকলেও শরীরে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ কমতে থাকবে। ভিটামিন এ বাড়ানোর জন্য আপনি মাছ, ডিম, কলিজা, দুগ্ধজাত খাবার, সবুজ শাক, কমলা, হলুদ শাকসবজি, টমেটো ইত্যাদি খাবারগুলি খান। এগুলোর সাহায্যে শরীরে রক্তের পরিমাণ বৃদ্ধি হবে।

৫. কপার জাতীয় খাবার

কপার সরাসরি শরীরে রক্ত তৈরি করে না। কিন্তু আরবিসি-কে আয়রন পৌঁছাতে সাহায্য করে। যার কারণে হিমোগ্লোবিন তৈরি হয়। কপার জাতীয় খাবার গুলি হলো শেলফিশ, মাংস, গোটা শস্য, সিরিয়াল ব্রান, চকোলেট, বাদাম ইত্যাদি।

কোন সবজি খেলে রক্ত হয়?

কচু শাক, কচুর লতি, কচু, টমেটো, পালং শাক, বিট, লেটুস, ব্রকোলি, ধনিয়া পাতা, মটরশুটি এবং পুদিনা পাতা এই সকল সবজি খেলে শরীরে রক্ত হয়।

শরীরে রক্ত কম হওয়ার লক্ষণ

  • শরীরে ত্বক ফ্যাকাশে হতে শুরু করবে।
  • শরীরে দুর্বলতা আসবে
  • ক্লান্তি অনুভব করবেন
  • মাথা ঘুরতে পারে
  • মাথা ব্যথা অনুভব করতে পারেন
  • শ্বাসকষ্ট হতে পারে
  • দ্রুত হৃদস্পন্দন হতে পারে।

কোন ফল খেলে রক্ত বাড়ে?

কমলা, লেবু, স্ট্রবেরি, টমেটো, গোলমরিচ, ডালিম, আপেল, বিট, লাল আঙ্গুর, ব্রকলি, বেদানা, কলা ইত্যাদি ফলগুলি খেলে শরীরে রক্ত বাড়ে।

কোন মাছ খেলে শরীরে রক্ত হয়?

মাছেদের মধ্যে, শিং মাছ খেলে শরীরে লোহিত কনিকার উৎপন্নতা সব থেকে বেশি হয়। এবং এই কারণে বলা হয় যে শিং মাছ খেলে শরীরের রক্ত হয়।

তবে শিং মাছ ছাড়া যদি আপনি লাল শাক, কচু শাক, কচুর লতি ইত্যাদি খেতে পারেন তাহলে থেকেও বেশি লোহিত কণিকা আপনার শরীরে উৎপন্ন হতে থাকবে।

রক্ত কমে গেলে কি খাওয়া উচিত?

শরীরের রক্ত বা হিমোগ্লোবিন কমে গেলে দূধ, শিং মাছ, মধু, ডিম, ফলমূল, শাক সবজি, ডাল, খেজুর, সোয়াবিন খান।

উপসংহার

আশা করছি যে আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে শরীরে রক্ত বৃদ্ধির উপায়, রক্ত কমে গেলে কি খাওয়া উচিত, কোন ফল খেলে রক্ত বাড়ে, কোন মাছ খেলে শরীরে রক্ত হয় – এই সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে গেছেন। যদি আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে আপনি কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

Leave a Comment