ব্লুটুথ কি – আজকের দিনে বেশিরভাগ ডিভাইসের মধ্যে কানেকশন তৈরি করার জন্য ব্লুটুথের ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন ব্লুটুথ হেডফোন, ব্লুটুথ মাউস, ব্লুটুথ কীবোর্ড ইত্যাদি।
আজকের দিনে বেশিরভাগ ব্লুটুথ ডিভাইস নিয়ে কাজ করা হচ্ছে কারণ বর্তমানে মানুষ তারবিহীন কানেকশন বেশি পছন্দ করছে।
কিন্তু এই ব্লুটুথ জিনিসটি কি এই সম্পর্কে অনেকেই জানেন না। এই জন্য আজকের এই আর্টিকেল থেকে আমরা ব্লুটুথ সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর জানবো।
যেখান থেকে আপনি ব্লুটুথ কি, ব্লুটুথ কিভাবে কাজ করে, ব্লুটুথ কিসের উদাহরণ – এই সমস্ত বিষয়ে জানতে পারবেন। যদি আপনি আপনার সম্পর্কে জানতে আগ্রহী হন তাহলে আর্টিকেলটি পড়তে থাকুন।
সূচিপত্র
ব্লুটুথ কি?
ব্লুটুথ হলো এমন একটি ওয়্যারলেস টেকনোলজি যেটির ব্যবহার করে দুটি ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মধ্যে ডাটা আদান-প্রদান করা যায়।
তবে অন্যান্য ওয়ারলেস কমিউনিকেশন মোড এর তুলনায় ব্লুটুথের ডেটা ট্রান্সমিশন হওয়ার দূরত্ব অনেক কম।
এই টেকনোলজি ব্যবহার করলে, ডাটা ট্রান্সফার করার জন্য ইউজারের কোনরকম cords, cables, adapters এর প্রয়োজন হয় না।
Bluetooth special interest group, ব্লুটুথ টেকনোলজির ডেভলপ করেছে। এই টেকনোলজির ফিজিক্যাল length দশ থেকে 50 মিটারের মধ্যে।
সাধারণত স্মার্টফোন এবং পার্সোনাল কম্পিউটারের মধ্যে ফাইল এবং অন্যান্য কিছু আদান-প্রদানের জন্য ব্লুটুথ ব্যবহার করা হয়।
ব্লুটুথ কে আবিষ্কার করেন?
1990 সালে, নেদারল্যান্ডের বিখ্যাত কালেক্টরেট ইঞ্জিনিয়ার Jaap Haartsen, Bluetooth আবিষ্কার করেন।
পরবর্তীকালে ডেনমার্কের রাজা হেরাল্ড ব্লুটুথ এর নাম অনুসারে, ব্লুটুথ নামকরণটি করা হয়।
ব্লুটুথ এর বৈশিষ্ট্য
- নতুন টেকনোলজি খুবই সিম্পিল। যেকোনো ব্যক্তি খুব সহজে এটি ব্যবহার করতে পারে।
- কম পাওয়ারে টেকনোলজিটি কাজ করতে পারে।
- যেকোনো জায়গায় যে কোন সময় ব্যবহার করা যায়।
- অন্যান্য ডাটা শেয়ারিং টেকনোলজি থেকে খুব সস্তা।
- দশ থেকে 50 মিটারের মধ্যে ব্যবহার করা যায়।
ফাইল শেয়ারিং এর সময় 1mb পর্যন্ত data rate থাকে।
ব্লুটুথ কিসের উদাহরণ
এটি ১-১০০ মিটার দূরত্বের মধ্যে ওয়্যারলেস যোগাযোগের একটি পদ্ধতি। এই কারণে এটি Personal Area Network (PAN) এর অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ ব্লুটুথ পার্সোনাল এরিয়া নেটওয়ার্ক এর উদাহরণ।
ব্লুটুথ এর সুবিধা ও অসুবিধা
এখন চলুন ব্লুটুথ এর সুবিধা ও অসুবিধা গুলি জেনে নেওয়া যাক।
ব্লুটুথ এর সুবিধা
- দশ থেকে 50 ফুট দূরত্বের মধ্যে যেকোনো ডিভাইসের মধ্যে ব্লুটুথ সংযোগ করে ফাইল শেয়ারিং করা যায়।
- ব্লুটুথ সংযোগ এর সময় কোন রকম তারের প্রয়োজন হয় না।
- একসাথে আটটি ডিভাইসের মধ্যে কানেকশন তৈরি করা যায়।
- মোবাইল, ল্যাপটপ, ডেক্সটপ, প্রিন্টার, হোম থিয়েটার, স্মার্ট ওয়াচ ইত্যাদির মত ডিভাইস গুলোর মধ্যে ব্লুটুথ ব্যবহার করা যায়।
ব্লুটুথ এর অসুবিধা
- ডাটা ট্রান্সফারের গতি খুবই কম।
- বেশিক্ষণ ব্লুটুথ চালিয়ে রাখলে ডিভাইসের চার্জ কমে যায়।
- দশ থেকে 50 মিটার দূরত্বের বাইরে কানেকশন করা যায় না।
ব্লুটুথ কিভাবে চালু করতে হয়?
ব্লুটুথ অপশন প্রত্যেকটি ডিভাইস এর মধ্যে দেওয়া থাকে। মোবাইল এবং কম্পিউটারের মধ্যে সেই অপশন খুঁজে বের করে, চালু করে দিলেই নির্দিষ্ট ডিভাইসের মধ্যে ব্লুটুথ চালু হয়ে যাবে।
ব্লুটুথ কি করে কানেক্ট করে?
ব্লুটুথ কানেক্ট করার জন্য প্রথমে দুটি ডিভাইসের মধ্যে ব্লুটুথ চালু করতে হবে। এরপর যেকোনো একটি ডিভাইস থেকে “Add a New Device” Option এ ক্লিক করতে হবে। এই অপশনটি আপনারা ব্লুটুথ অপশন এর মধ্যেই পেয়ে যাবেন।
এই অপশনটিতে ক্লিক করা মাত্র নির্দিষ্ট ডিভাইস টি অন্য ডিভাইসটিকে খুঁজতে শুরু করবে।
এরপর অপর ডিভাইসটির নাম প্রথম ডিভাইসটির সামনে এলে, Paired অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর একই কোড দুটি ডিভাইসে দেখতে পাবেন। কোডটি দেখা দিলে দুটি ডিভাইসেই Pair অপশন প্রেস করতে হবে। Pairing শেষ হলে দুটি ডিভাইস একে অপরের সাথে কানেক্ট হয়ে যাবে।
ব্লুটুথ কিভাবে কাজ করে?
ব্লুটুথ একপ্রকার রেডিও তরঙ্গের ভিত্তিতে কাজ করে। ব্লুটুথ এর মধ্যে যে টেকনোলজি ব্যবহার করা হয় সেটি হলো শর্ট ডিসটেন্স এর রেডিও টেকনোলজি।
এবং একাধিক ডিভাইসের মধ্যে থাকা রেডিও সিগন্যাল এর মধ্যে কানেকশন তৈরি হয়ে ব্লুটুথ কাজ করতে পারে।
একটি ব্লুটুথ ডিভাইস একসাথে অন্যান্য সাতটি ব্লুটুথ ডিভাইস এর সাথে কানেকশন তৈরি করতে পারে।
এবং ব্লুটুথ যে ফ্রিকোয়েন্সিতে সিগন্যাল আদান প্রদান করে, তার নাম হলো 2.4 GHz ফ্রিকুয়েন্সি।
উপসংহার
আশা করি আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে ব্লুটুথ কি, ব্লুটুথ কিভাবে কাজ করে, ব্লুটুথ এর সুবিধা এবং ব্লুটুথ কিভাবে চালু করতে হয় এই সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন। যদি ব্লুটুথ সম্পর্কে আপনার এখনো কিছু জানার থাকে, তাহলে কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।
আরও পড়ুন