বসন্তের কবিতা

অনেকেই বসন্তের কবিতা ভালোবাসেন। এইজন্য আজকের আর্টিকেল থেকে আপনি কিছু বসন্তের কবিতা পাবেন। আশা করছি কবিতাগুলি আপনার ভালো লাগবে।

বসন্তের কবিতা

বসন্তের কবিতা

বসন্ত বন্দনা
নির্মলেন্দু গুণ

হয়তো ফুটেনি ফুল রবীন্দ্র-সঙ্গীতে যতো আছে,
হয়তো গাহেনি পাখি অন্তর উদাস করা সুরে
বনের কুসুমগুলি ঘিরে । আকাশে মেলিয়া আঁখি
তবুও ফুটেছে জবা,–দূরন্ত শিমুল গাছে গাছে,
তার তলে ভালোবেসে বসে আছে বসন্তপথিক ।

এলিয়ে পড়েছে হাওয়া, ত্বকে কী চঞ্চল শিহরণ,
মন যেন দুপুরের ঘূর্ণি-পাওয়া পাতা, ভালোবেসে
অনন্ত সঙ্গীত স্রোতে পাক খেয়ে মৃত্তিকার বুকে
নিমজ্জিত হতে চায় । হায় কী আনন্দ জাগানিয়া ।

এমন আগ্রাসী ঋতু থেকে যতোই ফেরাই চোখ,
যতোই এড়াতে চাই তাকে দেখি সে অনতিক্রম্য ।
বসন্ত কবির মতো রচে তার রম্য কাব্য খানি
নবীন পল্ববে, ফুলে ফুলে । বুঝি আমাকেও শেষে
গিলেছে এ খল-নারী আপাদমস্তক ভালোবেসে ।

বসন্তের কবিতা রবি ঠাকুরের

আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে।
তব অবগুণ্ঠিত কুণ্ঠিত জীবনে
কোরো না বিড়ম্বিত তারে।
আজি খুলিয়ো হৃদয়দল খুলিয়ো,
আজি ভুলিয়ো আপনপর ভুলিয়ো,
এই সংগীত-মুখরিত গগনে
তব গন্ধ তরঙ্গিয়া তুলিয়ো।
এই বাহির ভুবনে দিশা হারায়ে
দিয়ো ছড়ায়ে মাধুরী ভারে ভারে।

অতি নিবিড় বেদনা বনমাঝে রে
আজি পল্লবে পল্লবে বাজে রে–
দূরে গগনে কাহার পথ চাহিয়া
আজি ব্যাকুল বসুন্ধরা সাজে রে।
মোর পরানে দখিন বায়ু লাগিছে,
কারে দ্বারে দ্বারে কর হানি মাগিছে,
এই সৌরভবিহ্বল রজনী
কার চরণে ধরণীতলে জাগিছে।
ওগো সুন্দর, বল্লভ, কান্ত,
তব গম্ভীর আহ্বান কারে।

বসন্তের কবিতা ছড়া

বসন্তের কবিতা

বসন্তের আগমনী
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

কুয়াশাভরা মেঘ গেছে কেটে
শীতের প্রকোপ নাই,
তরু শাখে হেরি নব কিশলয়
বিহগেরা গাহে তাই।

আম্রকাননে শুনি ক্ষণে ক্ষণে
কোকিলের কুহুতান,
আজি বসন্তে বসন্তের দূত
গাহে আগমনী গান।

আম্রের শাখে নব মঞ্জুরী
মুকুল ধরেছে কত,
কমল কাননে ধায় অলিগণে
গুঞ্জরিয়া অবিরত।

বসন্ত প্রভাতে অজয়ের ঘাটে
সুশীতল নদীজলে,
ভাটিয়ালি গেয়ে দাঁড় টানে মাঝি
ঘাট ভরে কোলাহলে।

যেদিকে তাই নব কিশলয়
পুলক জাগিছে মনে,
বসন্ত এসেছে কুসুম ফুটেছে
পলাশের বনে বনে।

বসন্তের ভালবাসার কবিতা

বসন্তের আগমন
শ্রাবণ আহমেদ

হঠাৎই এসেছো অলক্ষ্যে আমার তুমি,
চারিদিকে তোমারই গুণগান।
বাড়িয়েছো প্রকৃতির অসীম সৌন্দর্য তুমি,
বাড়িয়েছো তোমার রুপের মান।

সৌন্দের্যের দ্বার খুলে বসন্তের প্রাঙ্গনে,
করেছো তুমি বিচরণ।
তোমার আগমণে মুখরিত চারিদিক,
তুমি যে প্রথম ফাল্গুন।

লাল শাড়ি হলুদ শাড়ি সাদা শাড়ি পড়ে,
বেরিয়েছে কত রমণী পথে।
রঙ বেরঙের ফুলগুলো খোঁপায় গুঁজে,
সেজেছে তারা কারো অভিমতে।

দেখতে কিন্তু মোটেও মন্দ লাগছে না,
বরং অপূর্ব লাগছে বেশি।
বটের তলায় বসেছে ফাল্গুনী কন্যা,
অনবদ্য সে যে এলোকেশী।

বৃক্ষের পাতাগুলো ঝড়ছে অল্প অল্প করে,
মৃত্তিকার উপর অতি আবেশে।
শীতকে ছেড়ে বসন্তকে অতি আপন করে,
নিচ্ছে প্রকৃতি অধিক ভালোবেসে।

কোকিলের ডাক কিন্তু মোটেও শোনা যাচ্ছে না,
কিন্তু কেন, সে সম্বন্ধে কেউ জানেন?
আহা! এই শহরে বসন্ত আর অন্য মাস,
দুটো একই, মানেন বা না মানেন।

ব্যস্ত শহরে বসন্তের আগমনে থাকে না,
কোকিলের মধুর ডাক।
থাকে শুধু নারী পুরুষের শরীরে একক,
রঙের পোশাক-আশাক।

পার্কের নিষিদ্ধ বেন্চিতে ঝাঁকে ঝাঁকে থাকে,
বসন্ত আগমনের আভাস।
শহরের বসন্ত শুধু তাতেই আবদ্ধ,
প্রত্যক্ষ না পাতা ঝড়া বাতাস।

দক্ষিণা হাওয়া, পুষ্পিত বৃক্ষ না থাকুক,
তবুও এসেছে বসন্ত।
বরণ করেছে বাংলার মানুষ তাকে,
হয়েছে নিজে প্রাণবন্ত।

সবশেষে

আশা করছি আজকের এই আর্টিকেল এর মধ্যে দেওয়া বসন্তের কবিতা গুলি আপনার পছন্দ হয়েছে। এখানে যে সকল কবিতাগুলি দেওয়া হয়েছে সেগুলি বিভিন্ন ওয়েবসাইট থেকে কপি করে নেওয়া হয়েছে। যদি কোনো ব্যাক্তির কোনো আপত্তি থাকে তাহলে আমরা কবিতা গুলি এখান থেকে সরিয়ে নেব। ধন্যবাদ।

Leave a Comment