ভাষণ দেওয়ার নিয়ম | বক্তব্য শুরুতে ও শেষে কি বলতে হয়?

ভাষণ দেওয়ার নিয়ম – আজকাল প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে বিভিন্ন মানুষ ভাষণ দিয়ে থাকে। যদি আপনিও এরকম একজন ব্যক্তি হয়ে থাকেন এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে আপনাকে ভাষণ দেওয়ার জন্য কল আসে, তাহলে আপনাকেও কিভাবে ভাষণ দিতে হয় বা ভাষণ দেওয়ার নিয়ম কি এই সম্পর্কে জানতে হবে।

ভাষণ দেওয়ার নিয়ম যেন থাকলে আপনি খুব সহজে যে কোন একটি বক্তব্যকে দর্শকদের সামনে পেশ করতে পারবেন।

যদি আপনিও ভাষণ দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান এবং বক্তব্য শুরুতে ও শেষে কি বলতে হয় – এই সম্পর্কে ধারণা না থাকে তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটা পড়তে থাকুন।

ভাষণ দেওয়ার নিয়ম

এখানে ভাষণ দেওয়ার সাত টি পয়েন্ট দেওয়া হল। সুন্দরভাবে ভাষণ দেওয়ার জন্য আপনি এই সাতটি জিনিস ভালোভাবে আয়ত্ত করে নিন।

১. অনুশীলন করে নিন

যেকোনো ভাষণ দেওয়ার সময় অনেক বক্তা আছেন যারা অস্থির বোধ করে থাকে। এই অস্থিরতা দূর করার জন্য ভাষণ দেওয়ার আগে সমস্ত লেখাটি অনুশীলন করে নিন। বারবার অনুসরণ করার পর আপনার মধ্যে থেকে থেকে অস্থির বোধটা চলে যাবে।

২. বিষয়বস্তু সাজিয়ে নিন

আপনি যে বক্তব্যটি রাখতে চাচ্ছেন সেই বক্তব্যের বিষয়বস্তু যদি সাজানো থাকে তাহলে স্টেপ বাই স্টেপ আপনি বক্তব্যটি রাখতে পারবেন। এবং ভাষণ দিতে আপনার কোন অসুবিধা হবে না।

অনেক বক্তা আছেন যারা স্টেজে গিয়ে মেকআপ দেয়। এই কারণে তাদের অনেক ভুলভ্রান্তি হয়ে যায়। তবে এর হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য আপনি এই ভুলটি করবেন না।

এইজন্য সর্বপ্রথম আপনি যে বক্তব্যটি দিতে চাইছেন সেটি এক জায়গায় লিখে নিয়ে সেটিকে সাজিয়ে নিন।

৩. শ্রোতা বুঝে ভাষণ রাখুন

আপনি যে জায়গায় ভাষন রাখতে যাচ্ছেন সেই জায়গায় শ্রোতারা কেমন সেটি আগে থেকে অনুমান করে নিন। এবং তারপর আপনার ভাষণের স্ক্রিপটি সাজিয়ে গুছিয়ে নিন।

সেখানে কি ধরনের বক্তব্য রাখতে হবে এবং তার জন্য ভাষা কি থাকবে এবং কি কি শব্দ ও বাক্য সেখানে বলা উচিত এই সমস্ত কিছু সম্পর্কে একটি ধারণা তৈরি করে নিন।

৪. না দেখে বক্তব্য রাখুন

অনেক ব্যক্তি আছেন যারা স্লাইড এবং কাগজ দেখে দেখে বক্তৃতা দিয়ে থাকে। এই কারণে নির্দিষ্ট বক্তার সাথে দর্শকদের একটি যোগাযোগের ব্যাঘাত ঘটে।

এইজন্য যে ভাষণে রাখতে চাইছেন সেটিকে প্রথমে মুখস্ত করে নিন বা নিজের মন থেকে গুছিয়ে নিন এবং তারপর সেটিকে নিজের মতো করে দর্শকদের সামনে পেশ করুন। যার ফলে দর্শকরাও খুশি হবে।

৫. স্বরভঙ্গির ঠিক ব্যবহার

বক্তব্যটি রাখার সময় কখন গলা উঁচু করে এবং কখন গলা নিচু করে কথা বলা দরকার সেটি আগে থেকে ঠিক করে রাখুন।

৬. দর্শকদের মনোযোগ আকর্ষণ করার চেষ্টা করুন

বক্তব্য শুরু করার আগে সরাসরি বক্তব্যে না গিয়ে তার আগে কিছু জনপ্রিয় ব্যক্তির উক্তি বা মোটিভেশনাল কোন গল্প দিয়ে ভাষণ শুরু করুন।

৭. গল্প ও কৌতুক যোগ করুন

ভাষণ যাতে দর্শকদের বোরিং না লাগে তার জন্য ভাষণের মাঝে কিছু ইন্সপায়ারিং গল্প এবং মজার কৌতুক যোগ করতে পারেন।

বক্তব্য শুরুতে কি বলতে হয়?

আমি হলাম বলে আপনার ছোট একটি ইন্ট্রো দিন। তারপর – সালাম, আসসালামু আলাইকুম, নমস্কার, আমার প্রিয় ভাই বোন দের ভালোবাসা এবং মায়েদের প্রণাম জানিয়ে আমার বক্তব্য শুরু করছি।

এই কথাটি বলার পর আপনি বক্তব্য শুরু করতে পারেন।

বক্তব্য শেষে কি বলতে হয়?

মূল বক্তব্য বিষয়টির সংক্ষিপ্ত সার প্রদান করে, শ্রোতাদের প্রসংসা করে এবং যদি পারেন অল্প হাসিয়ে, শ্রোতারা চাইবার আগেই বক্তব্য শেষ করে ফেলুন।

একটি ভাষণের উদাহরণ

আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আজ এই সভা উপস্থিত সম্মানিত সভাপতি, পরিচালক, উপস্থিত অভিভাবকবৃন্দ ও সকল শিক্ষার্থীদেরকে আমার পক্ষ থেকে আন্তরিক শুভেচ্ছা। এবিসি মাধ্যমিক বিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে আমি আজ প্রিয় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য কিছু কথা বলতে চাই।

এরপর মূল বক্তব্য রাখুন।

এখন মূল বক্তব্য বিষয়টির সংক্ষিপ্ত সার প্রদান করে, শ্রোতাদের প্রসংসা করে এবং যদি পারেন অল্প হাসিয়ে, শ্রোতারা চাইবার আগেই বক্তব্য শেষ করে ফেলুন।

উপসংহার

আশা করছি আজকের এই আর্টিকেলটি থেকে ভাষণ দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনি বুঝতে পেরেছেন। যদি আর্টিকেলটি সম্পর্কে এখনও কিছু জানার থাকে তাহলে আপনি কমেন্ট করে আমাদের জানাতে পারেন। ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

Leave a Comment